সংবাদ শিরোনাম :
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী শামীম কে বিয়ানীবাজার উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। শ্রীমঙ্গলে কৃষকদলের মহা সমাবেশ এসএমপি ডিবির অভিযানে জুয়া খেলার সামগ্রীসহ ০৪ (চার) জুয়ারী গ্রেফতারঃ কোন আর্থিক সহযোগিতা ছাড়াই পালিত হবে মহান বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবস শ্রীমঙ্গলে ২দিন ব্যাপী তথ্য মেলার উদ্বোধন শ্রীমঙ্গলে মাদকের আস্তানা থেকে নগদ টাকা ও মাদকসহ আটক ৩ তারেক জিয়ার পিপিই বিতরন করায় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাব সম্পাদককে বহিষ্কার ৫ বছর পর ৫৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা ছাতকে দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্রাকের অবহিত করণ সভা অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজারে এডাবের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্টিত শ্রীমঙ্গলে পুলিশের অভিযানে আটক ৩
সিআইডির তদন্তে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া স্ত্রী, সন্তান

সিআইডির তদন্তে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া স্ত্রী, সন্তান

 

রুহুল ইসলাম মিঠু, সিলেট জেলা প্রতিনিধি :
ভুয়া তথ্য দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন ও বিবাহ নিকাহনাম সহ অন্যান্য কাগজপত্রে জালিয়াতির সাহায্য নিয়ে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারের বনকলাপাড়ার নূরানী-৭৮ নং বাসার সত্ত্বাধিকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ তছির আহমদের ৩য় স্ত্রী সেজে অসৎ ফায়দা লুটে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিলেটের সিআইডি’র এক তদন্ত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ তছির আহমদের ৩য় স্ত্রী ছমছুন নেছা ও তার মেয়ে শিমলী বেগম সহ মুক্তিযোদ্ধার ২য় স্ত্রী বিধবা সাহেনা বেগম অন্যত্র বিয়ে পর সে সংসারে জন্মগ্রহণকৃত সৈয়দ আবু নাঈম আজাদ টিপু নামক ছেলে গং প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও সন্তান সেজে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ।
সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিয়ানীবাজার আমলী আদালত-৪ এর নির্দেশ ক্রমে বিয়ানীবাজার সিলেট সিআর-৮৮/২০২৩ইং মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ তছির আহমদের ২য় স্ত্রীর সংসারে সন্তান সৈয়দ আবু শাহীন আজাদ খোকন- এর দায়ের করা মামলার আবেদনের প্রেক্ষিতে সিআইডি’র তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট জেলা ও মেট্রোর উপ-পুলিশ পরিদর্শন (নিরস্ত্র) মোঃ নাজমুল হক দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত করে মামলার বিবাদী বিয়নীবাজার থানার আলী নগর ইউপির চন্দরপুর গ্রাম নিবাসী মামলার বিবাদী ১. শিমলি বেগম (৩০), পিতা- মৃত তছতই আহমদ, ২. ছমছুন নেছা (৪৮), পিতা- মৃত ওয়াতির আলী কুটি, ৩. মজির আহমদ লেদন (৫৩), পিতা- মৃত ওয়াতির আলীকুটি, ৪. ময়না মিয়া (৫২), পিতা- মৃত কলমদর আলী, ৫. বেদন মিয়া (৪৫), পিতা- মৃত ওয়াতির আলী কুটি, ৬. সিরাজ মিয়া (৫০), পিতা- মৃত ওয়াতির আলী কুটি, সর্ব সং- চন্দরপুর, ডাকঘর- আলীনগর, থানা- বিয়ানীবাজার, জেলা- সিলেট গংদের বিরুদ্ধে তদন্ত করেন। তদন্তকালে ১নং ও ২নং বিবাদীর বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ তছির আহমদের সন্তান ও ৩য় স্ত্রী দাবী করে। কিন্তু তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন ও বিবাহের রেজিস্ট্রারী নিকাহনামা সহ অন্যান্য কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা সহ স্বাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ কালে কোন প্রমানাদি তারা দেখাতে পারেনি। রেজিস্ট্রারী কাবিননামায় কাজীর স্বাক্ষর নেই।
মামলার ৪নং বিবাদী ময়না মিয়া ভুয়া স্ত্রী ছমছুন নেছা ও সন্তান শিমলি বেগম-কে জালিয়াতি কাগজপত্র তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন।
গত ৫ নভেম্বর-২০২৪ ইং সিআইডি’র তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট জেলা ও মেট্রোর উপ-পুলিশ পরিদর্শন (নিরস্ত্র) মোঃ নাজমুল হক সংশ্লিষ্ট আদালতের নির্দেশে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিয়ানীবাজার আমলী আদালত-৪ এ তদন্ত প্রতিবেধন দাখিল করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বিবাদীদের জিজ্ঞাসাবাদ কালে ছমছুন নেছা তার বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বামীর নাম তছতই আহমদ লেখান। তিনির সন্তান মিথ্যা তথ্য দিয়ে পিতার নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ তছির আহমদের নাম লেখান।
সিআইডি কর্মকর্তার জিজ্ঞাসাবাদ কালে বিবাদীরা কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। বিবাদীদের মানিত স্বাক্ষীরাও উপযুক্ত প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়।
উক্ত আদালতের সিআর- ৮৮/২৩ মামলাটি গত ২০ ডিসেম্বর-২০২৩ ইংরেজি সিলেট সিআইডির হাতে ন্যাস্ত করা হয়। মামলার স্মারক নং ৫৯৫।
এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাদীর পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ তছির আহমদ বিগত ১৯৯১ সালে ১৬ এপ্রিল সিলেটস্থ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি ২ স্ত্রী, ১০ জন ছেলে মেয়ে রেখে যান। ১ম স্ত্রীর নাম রুনি বেগম ও ২য় স্ত্রীর নাম সাহেনা বেগম। বিধবা সাহেনা বেগম পরবর্তীতে অন্যত্র বিবাহ করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ তছির আহমদ জীবিত থাকাকালে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারের অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড শাখায় বিগত ১৯৮১ সালে একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলেন। আদালতের নির্দেশে উক্ত একাউন্টে ইংরেজিতে করা স্বাক্ষরটি ৩য় স্ত্রী দাবী করা ছমছুন নেছার বিবাহ নিকাহনামার দস্তখতের সাথে মিল নেই। উক্ত নিকাহনামায় যাদেরকে স্বাক্ষী রাখা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ কালে সঠিক প্রমাণাদি দেখাতে পারেনি। নিকাহনামায় স্বাক্ষীদের স্বাক্ষরও নেই। সেজন্য উক্ত নিকাহনামাটি সিআইডি কর্মকর্তা জব্ধ করে রাখেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ তছির আহমদের ২য় স্ত্রী সাহেনা বেগম অন্যত্র বিবাহের পর সেই সংসারের সন্তান সৈয়দ আবু নাঈম আজাদ টিপুর দু’ধরনের জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদে পিতার নাম জালিয়াতের মাধ্যমে প্রতারণা ধরা পড়েছে। সকল বিবাদীরা সঠিক প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।
সিলেট নগরীর সুবিদবাজারের বনকলাপাড়ার নূরানী- ৭৮নং বাসার সত্ত্বাধিকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ তছির আহমদের পৈতৃক নিবাস বিয়ানীবাজার থানার আলীনগর ইউপির চন্দরপুর গ্রামে। পরবর্তীতে সৈয়দ তছির আহমদের সিলেট নগরীর স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ায় তার সন্তানরা সবাই সিলেট নগরীর বাসিন্দা। গ্রামের সাথে তাদের কোন যোগাযোগ নেই।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ তছির আহমদের ১ম স্ত্রীর ৫ জন সন্তান যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে স্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন। ২য় স্ত্রীর ৫ জন সন্তান দেশে বসবাস করছেন। এ সুযোগে উক্ত মামলার বিবাদী শিমলী বেগম ও ছমছুন নেছা গং সংঘটিত হয়ে তছির আহমদের সহায় সম্পদ অসৎ ভাবে আত্মসাৎ করতে প্রতারণমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সন্তান সেজে সুবিধা আদায় করে নিয়েছে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন :





© All rights reserved © 2021 Holysylhet