হলি সিলেট ডেস্কঃ
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) আওতাধীন মোট ১২টি গ্যাসকূপ রয়েছে। আরোও তিনটি নতুন কূপ খননে সম্প্রতি টেন্ডার প্রদান করা হয়েছে । কিন্তু গ্যাসের বদলে মিলেছে তেল। ১০ নম্বর কূপ খননকালে গ্যাসের সাথে মিলেছে তেল । উক্ত কূপটি গ্যাস উত্তোলনের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। শিগগিরই এই গ্যাস যোগ হবে জাতীয় গ্রিডে। পাশাপাশি ওই কূপের পাশেই শুধু তেলের জন্য আরেকটি কূপ খনন করার কাজ প্রায় চূড়ান্ত। হলি সিলেটের সাথে আলাপ কালে এমন তথ্য জানিয়েছেন এসজিএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান।
মিজানুর রহমান আরোও জানান, সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের ১০ নম্বর কূপে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫ ব্যারেল তেলের প্রবাহ পাওয়া গেছে। যা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮০০ ব্যারেল তেল উৎপাদন হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই এলাকায় প্রায় ১৫-২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । এই তেল উত্তোলনে সরাসরি তেল কূপ খননের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।
এসজিএফএলের অন্যান্য কর্মকর্তাগন ও বিভিন্ন সূত্র জানায়, নতুন এই কূপ খননের লক্ষ্যে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫৬ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে ‘সিলেট-১২ নম্বর কূপ (তেল কূপ) খনন’ নামে একটি প্রকল্প প্রস্তাব বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে অদ্য প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উক্ত সভায় বিষয়টি সিদ্ধান্ত হলে এসজিএফএল অক্টোবর ২০২৪ থেকে জুন ২০২৬ পর্যন্ত মেয়াদের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে ।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে
ভূতাত্ত্বিক গবেষণা মতে , বাংলাদেশ গ্যাসের জন্য বেশ সম্ভাবনাময়। গ্যাসের পাশাপাশি তেলেরও সম্ভাবনা আছে। তবে গ্যাসের তুলনায় তেলের স্তর ছোট। বিশেষজ্ঞদের মতে ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত মোট ৫ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদিত হয়েছিল সিলেটে আবিষ্কৃত দেশের প্রথম তেল কূপ থেকে। বর্তমানে বাংলাদেশে কোনো সক্রিয় তেল কূপ নেই। অথচ দেশে বর্তমানে বছরে তেলের চাহিদা প্রায় ৭২ লাখ টন। সিলেটে কূপ খনন হলে এই প্রাপ্তি হবে বিরাট সম্ভাবনার ।
অধ্যাপক বদরুল বলেন, তবে তেলক্ষেত্র শুধু খনন করলেই হবে না। যথাযথ প্রক্রিয়ায় উত্তোলন করা একান্তই জরুরী । তবে তিনি আরোও বলেন, আন্তর্জাতিকমানের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা না হলে তেল কূপের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনির অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
কূপ খনন বিশেষজ্ঞদের মতে, এসজিএফএলের ১০নং কূপের দেড় হাজার মিটার নিচের স্তরে মিলেছে ‘ক্রুড’ বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুত। বাকি সব স্তর শুধু গ্যাসের। ‘ড্রিল স্টিম টেস্ট’ বা ‘ডিএসটি’ চলাকালে কূপটিতে ঘণ্টায় ৩৫ ব্যারেল তেলের প্রবাহ নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান হলি সিলেটকে বলেন, আশার খবর হচ্ছে সিলেটে গ্যাসের পর আমরা তেলের কূপে হাত দিতে যাচ্ছি । এখন থেকে কিছুটা হলেও চাহিদা মেটাতে তেল পাওয়া যাবে। ফলে তেল আমদানি নির্ভরতা আমাদের কিছুটা হলেও কমবে।