সংবাদ শিরোনাম :
শ্রীমঙ্গলে ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার বন্যায় ক্ষতিগস্থ মানুষের পাশে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব ও সারথী ট্রান্সপোর্ট সিলেট সিটি প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন সভাপতি বাবর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাগর ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে শ্রীমঙ্গল সিরাজনগর দরবার শরীফের আয়োজনে বিশাল জশনে জুলুস সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন মৌলভীবাজারে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) পালিত গোলাপগঞ্জে অস্ত্র সহ যুবক আটক শ্রীমঙ্গলে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা- শ্রমিক ফেডারেশন বিক্ষোভ সমাবেশ দুর্নীতির খবর পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কাশিমপুর কারাগার থেকে পলাতক আসামি র‌্যাবের হাতে আটক
গোলাপগঞ্জে মামলা হামলায় দাঁড়াতেই পারেনি বিএনপি-জামায়াত

গোলাপগঞ্জে মামলা হামলায় দাঁড়াতেই পারেনি বিএনপি-জামায়াত

 

ইমন আহমদ, গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি :
সারাদেশের ন্যায় একের পর এক গায়েবী ও মিথ্যা মামলায় কোথাও দাঁড়াতে পারেনি গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা। ঠুনকো কারনেও মামলার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে থাকতে হয়েছে তাদেরকে।
গত ১৬ বছরে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শত শত গায়েবী মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে মামলা আর আইনশৃংখলা বাহিনী কর্তৃক এখানে সবচেয়ে বেশী হয়রানির শিকার হয়েছে জামায়াত-শিবির। এখনো তাদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা চলমান। এসব মামলা কবে প্রত্যাহার হবে, তা জানাতে পারেননি উভয়দলের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, ‘রাজনৈতিক কারনে দায়ের করা সবগুলো মামলা মিথ্যা।’

ভূক্তভোগী অনেকের সাথে আলাপ করে জানা যায়, কোন ঘটনা না ঘটেলেও আইনশৃংখলা বাহিনী বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতো। অনেকের বাসাবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্টানে অভিযান পরিচালনা করা হত। আওয়ামীলীগ সরকারের টানা মেয়াদে কত রাত তাদের বাড়ির বাইরে কাটাতে হয়েছে, তা হিসাব করে বলা কঠিন। গায়েবী মামলার কারণে গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও লক্ষনাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নসিরুল হক শাহিন ও
গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ভাদেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জিলাল উদ্দিন দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেন। এছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলা জামায়াত এর এসিস্টেন সেক্রেটারী ৩ নং ফুলবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুল হাসান সাহান ও কানাডায় আশ্রয় নেন, তিনির বিরুদ্ধে ও রয়েছে কয়েকটি মামলা।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা সেচ্ছাসেবক দল এর সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সামাদুর রহমান অপু ও ফ্রান্সে আশ্রয় নেন।

এছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি- জামায়াত পন্তি মেম্বার, কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে রয়েছে মামলা।

গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি গোলাপগঞ্জ ২ নং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসফাক আহমদ চৌধুরীর উপর রয়েছে কয়েকটি মামলা। তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন ষড়যন্ত্র করে কয়েক দিনের জন্য চেয়ারম্যান পদ বাতিল করা হলে ও আইনি মোকাবেলা করে পুনরায় চেয়ারম্যান পদ ফিরে পান। গোলাপগঞ্জ পৌর ছাত্রদল এর সাবেক সভাপতি ও সিলেট জেলা বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন এর উপর সর্বোচ্চ ১৯ টি মামলা ছিল বলে তিনি জানান,বর্তমানে হাসিনা সরকার পতনের পর প্রায় ১৭ টি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি।

এছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, সেচ্ছাসেবক দল, জামায়াত, ছাত্র শিবির এর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ সকল নেতৃবৃন্দের উপর রয়েছে ডজন খানিক মামলা। এমন কি উপজেলা বিএনপি ১৬ টি বৎসরে তাদের একটি অফিস করতে পারে নি গোলাপগঞ্জে। জামায়াত ও একইভাবে কোন কার্যালয় করতে পারেনি গোলাপগঞ্জে।

ভূক্তভোগী নেতাকর্মীরা জানান, ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃস্থানীয় প্রায় সবাই কারাবরণ করেছেন। অনেককে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। কারাবরণ করা মামলাগুলো পুরোটাই মিথ্যা। পুলিশ বাদী হয়ে এসব মামলা করেছে।

এ ধরনের মামলার বৈধতা সম্পর্কে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘মানুষকে হয়রানি করার জন্যই মিথ্যা মামলা করা হয়। আইনে এর কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাও নেই।’ সিলেট জেলা বারের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক
এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন দিলু বলেন, কোনো ঘটনায় উপস্থিত না থেকেও যে মামলা দেওয়া হয় সেটা গায়েবি মামলা। কিন্তু কোনো ঘটনাই যদি না ঘটে এমন মামলার নাম হতে পারে ভূতুড়ে মামলা।

জানা যায়, গত ১৬ বছর গোলাপগঞ্জ থানায় মামলার অবস্থা ছিল তথৈবচ। কোন ঘটনা না ঘটলেও মামলায় ককটেল বিস্টেম্ফারণ ইট ও পাথর নিক্ষেপের কথা বলা হতো। গায়েবি মামলার অধিকাংশই যে রাজনৈতিক মামলা তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি নোমান উদ্দিন মুরাদ বলেন, গত সরকারের আমলে বিএনপি তথা বিরোধী মতের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপর দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমরা আদালতে তালিকা জমা দিয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

গোলাপগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির জিন্নুর চৌধুরী জানান, আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো মিথ্যা। এসব কোন মামলাই আদালতে ঠিকবেনা। আর গায়েবী মামলাগুলো প্রত্যাহারে দলীয় নির্দেশণা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন :





© All rights reserved © 2021 Holysylhet