এ এ রানা::
নগরীর কালীঘাট বস্তাপট্টিতে কিছুতেই থামছে না ইন্টারনেট ভিত্তিক ভারতীয় শিলং তীর ও জান্ডুমান্ডু নামক জুয়ার রমরমা প্রতারণা। থানা প্রশাসন ও বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির নেই কোনো অভিযান। বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে এবিষয়ে বারবার অবগত করলেও অজ্ঞাত কারণে নেয়া হচ্ছে না আইনী কোনো ব্যাবস্থা ।

দিনে টোকনের মাধ্যমে তীর খেলা আর রাতে বসে ঝান্ডু-মান্ডু জুয়ার আসর। এই জুয়ার বোর্ড বসিয়ে দিনমজুর থেকে অনেকে হয়ে উঠেছেন লাখপতি । আর যারা এই জুয়া খেলতে আসে তারা হারাচ্ছে সর্বত্র। অনেকেই সব কিছু হারিয়ে এমনকি পরিবার পরিজনদের বিপাকে ফেলে পথে বসতে হয়েছে। বিগত সংসদ নির্বাচনের পূর্ব থেকে মহানগর ডিবি পুলিশের অভিযানে বন্ধ থাকলেও গত দু সপ্তাহ থেকে খালিঘাট বস্তাপট্টির ছাদে জমে উঠেছে অবৈধ জুয়ার রমরমা আস্তানা। এমন কর্মকান্ড দেখে স্থানীয়রাও হয়েছেন বাকরুদ্ধ।
জানা গেছে, কালিঘাটের বস্তাপট্টি নামক মার্কেটে নিচ তলায় রড-সিমেন্টসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকান। দুটি গলির একটু ভিতরে গেলে দেখা যায় দু’তলার ছাদের সিঁড়ি। বিল্ডিংয়ের সিঁড়ি বেয়ে উঠলেই ছাদের এক পাশে রাখা পলিথিন ও পাটের বস্তার বান্ডিল। তাই এই মার্কেট সবার কাছে ‘বস্তা মার্কেট’ নামে পরিচিত। উপরে যুবদল নেতা শরিফের জুয়ার আস্তানা। অপর পাশে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে কালা জামাল । জামালের সাথে আরো অনেক সহযোগী আছে তারা টেবিল চেয়ার নিয়ে বসে আছে কাগজের কিছু টুকরো নিয়ে । জুয়া খেলতে সারি বেঁধে আসছেন নানা পেসার লোকজন। চেয়ারে বসা যুবকরা তাদেরকে ১০/২০/৫০/১০০/৩০০/৫০০/১০০০ টাকার বিনিময়ে একটি টোকেন দিচ্ছেন। কেউবা নিচ্ছেন কয়েকটি। এমনকি কেউ কেউ একসাথে ২০টি টোকেনও নিচ্ছেন। এ যেন কোনো যানবাহনের অথবা চিকিৎসকের টিকিট কাউন্টার। কিন্তু আসলে এই টোকেন হচ্ছে শিলং তীর খেলার রশীদ । একই জায়গার চিত্র পালটে যায় সন্ধ্যার পর। সন্ধ্যার পর বসে ঝান্ডু-মান্ডু জুয়ার আসর। জামালের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় শরিফের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে চলে জুয়ার আস্তানা।

দল বেধেঁ জুয়াড়িরা ঝান্ডু-মান্ডুর খেলেন। এই জুয়ার বোর্ডের নেতৃত্ব দেন মাদক সহ একাদিক মামলার আসামী ছাত্রদলের শরীফ আহমদ। কালীঘাটের বোর্ডের শরীফের সহযোগী বড় জামাল ও ছোট জামাল দিনে তীর শিলং ও রাতে ঝান্ডু-মান্ডু জুয়ার আসর বসান। এখানেও শরীফের সহযোগী মাছুম, ছেন্টু ও মঞ্জু এই জুয়ার আসর পরিচালনা করেন। শরীফ ৫ বছর আগে একটি কাপড়ের দোকানের সামান্য কর্মচারী ছিলো । কিন্তু জুয়ার বোর্ডের অদৃশ্য টাকায় এখন তিনি কোটিপতি। নগরীতে রয়েছে তার ৩ তলা বাসা, রয়েছে দামী প্রাইভেট গাড়ি। শ্রমজীবি মানুষরা লোভে পরে এই জুয়াখেলে। আর তারা এরকম ধান্দাবাজী করে গরীবের ধন হাতিয়ে নিয়ে বিলাশ বহুল জীবন যাপন করছে।
শরীফের বিরোদ্ধে এয়ারপোর্ট থানা সহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। তবে জামাল রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে প্রশাসন সহ নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করে জামাল।
এবিষয়ে বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কে তার মুঠো ফোনে কল দিয়ে একাধিকবার যুবদলনেতা শরিফের জুয়ার আস্তানার বিষয়টি অবগত করলেও এ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করেননি বরং বিরক্তি প্রকাশ করছেন। আজো বন্ধ করতে পারেননী বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ। শরিফের জুয়ার আস্থানা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর কি ভাবে চালুর অনুমতি পেল আর আপনি কেন অভিযান দিচ্ছেন না…? এমন প্রশ্নের জবাবে ফুঁসে উঠেন জবাবে বলেন আর দেখতে পাচ্ছেন না এটাই দেখলেন। বেশ রেগে গিয়ে আরো বলেন, ঠিক আছে আপনি ফোন দেয়ায় আমি জানলাম আজকে, আগামীকাল অভিযান দেব। সেই অভিযানের কোনো হদিস খোঁজে পাওয়া না গেলেও শরিফ ও জামালের জুয়ার আস্তানা ঠিকই চলছে এমন হদিস পাওয়া যাচ্ছে।
চলবে……..!